সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নজির হোসেনের দুর্গ নিয়ে দুই শিষ্যের কাড়াকাড়ি, মনোনয়নে আনিসুল, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে কামরুল প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা, আপিল করবে মন্ত্রণালয় ৩০ একর জায়গা দখল করে মৎস্য নিধনের অভিযোগ ১০ মাসে ঢাকায় ১৯৮ হত্যাকান্ড সদর হাসপাতালের কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন সিলেটে ১৯ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ হাওরাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নে যুগান্তকারী উদ্যোগ নেয়া হবে : তোফায়েল আহমদ খান কাগজে বাস্তবায়িত হচ্ছে হাওরে ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প! শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদন্ড, মামুনের ৫ বছরের কারাদন্ড পথে যেতে যেতে : পথচারী উন্নত দেশ গড়তে ধানের শীষে ভোট দিন : আনিসুল হক একটি মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে : মির্জা ফখরুল সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপনে সভা তিন বার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি আর্চ সেতুর কাজ ছাতকে প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর ভস্মিভূত বিএনপি’র চূড়ান্ত মনোনয়নে মাহবুবুর রহমানকে মূল্যায়নের দাবি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন জামায়াতকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না, ভোটও দেবে না : মির্জা ফখরুল দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় বিজলী কৃষিকে অন্তর্ভুক্তের দাবি শান্তিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা
ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে ৪ বছর মেয়াদ

কাগজে বাস্তবায়িত হচ্ছে হাওরে ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প!

  • আপলোড সময় : ১৮-১১-২০২৫ ১২:০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-১১-২০২৫ ১২:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন
কাগজে বাস্তবায়িত হচ্ছে হাওরে ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প!
শামস শামীম::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের স্বাধীন মিয়া মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। তিন বছর ধরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে তিনি অবস্থান করছেন। একই উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের হুসেননগর গ্রামের সাজু রহমানও মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। প্রায় ৩ মাস ধরে তিনি দেশে অবস্থান করছেন।
সুনামগঞ্জ প্রাণিসম্পদ অফিসের সরকারি তালিকায় তারা দুইজন সফল ঘাস চাষী! তারা কখনো ঘাস চাষ করেননি বলে জানান এই প্রতিবেদককে। সুনামগঞ্জের হাওরে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প এভাবেই কাগজে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত এই প্রকল্প বাস্তবিক অর্থে কোনও কাজে আসছে না। নামকাওয়াস্তে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কয়েকটি প্রশিক্ষণ দিলেও ভিন্ন ভূমি বৈশিষ্ট্যের হাওর এলাকায় প্রকল্পটি কাঙ্খিত সফলতা নিয়ে আসতে পারেনি। এক দফা মেয়াদ বৃদ্ধি শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে চার বছর মেয়াদী প্রকল্প শেষ হতে চলছে। কৃষকরা প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে আদৌ কোনও ভূমিকা রাখছেন কি-না তাও তদারকি হচ্ছে না।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাওরাঞ্চলসহ সারাদেশে প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে ‘উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প’র কাজ শুরু হয় চার বছর আগে। ২০২৪ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরো এক বছর বাড়ানো হয়। তারপরও হাওরে কাঙ্খিত সুফল মিলেনি।
জানা গেছে, কাগজে কলমে হাওর জেলা সুনামগঞ্জে প্রায় ৭শ ঘাস খামারি রয়েছে বলা হলেও বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সরকারি তালিকাভুক্ত ঘাস খামারিরা জানালেন তারা ঘাস চাষ করেন না। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজন তাদের নাম যুক্ত করেছেন তালিকাতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সুনামগঞ্জ জেলাসহ ৪৭৫টি উপজেলায় ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পভুক্ত প্রতিটি উপজেলায় একটি স্থায়ী জার্মপ্লাজম নার্সারি স্থাপন, আধুনিক ঘাস সংরক্ষণ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ, কৃষক পর্যায়ে প্রদর্শনী প্লট এবং সাইলেজ (ঘাস সংরক্ষণ) করার নির্দেশনা ছিল। প্রাণীপুষ্টির সংস্থানের জন্য নেপিয়ার, জার্মান ঘাস ও হাইব্রিড ঘাস চাষ করার কথা প্রকল্পভুক্ত কৃষক ও খামারিদের। সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ১০৯ জন কৃষককে ঘাস চাষের লাগসই কিছু প্রযুক্তি কিছু হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু যাদের এই প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে তারা নিজেরাই সেটা কাজে লাগাননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৪৫ জন কৃষককে ঘাস চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে স্থায়ী ও মওসুমী ঘাস চাষ হয়েছে ৭৭ হাজার ৫০ একর ঘাস। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ক্যাম্পাসে সরকারি প্রদর্শনী প্লটও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ খামারি বা চাষীদের ঘাস চাষ করতে দেখা যায়নি।
সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের হোসেননগর গ্রামের সাজু রহমান বলেন, আমি সৌদি আছলাম। ৩-৪ মাস আগে দেশো আইছি। আমি কোনও ঘাস-টাস চাষ করছিনা। আমার নাম চেয়ারম্যান সাব তালিকায় দিছইন।
একই ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের কৃষক কুতুব উদ্দিন বলেন, আমি কোনওবালা ঘাস চাষ করছিনা। তবে একবার প্রশিক্ষণ দিসলাম। আমারে কিছু পানি কাপড় ও ১টা বালতি দিছলো। আর কুন্তা জানিনা।
সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নরুল্লা গ্রামের আলী নূর বলেন, আমার গরু-বাছুর আছে। তবে আমি ঘাস চাষ-টাস করছিনা। আমি একদিনের ট্রেনিং দিসি আর কিছু পলিথিন পাইছি। কিছুদিন পরে চাষ করার চিন্তা করতেছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তিন বছর মেয়াদী ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প এ বছরের ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে। আমরা ১১ উপজেলার কয়েক হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছি। তবে হাওর এলাকা বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে ডুবে থাকায় এখানে নিয়মিত চাষ করা অসম্ভব। তারপরও যারা প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি পেয়েছেন তারা যাতে ঘাস চাষ ও সাইলেজ (সংরক্ষণ) করতে পারেন সেদিকে আমরা নজর রাখবো।

প্রকল্প পরিচালক আমজাদ হোসেন ভূইয়া বলেন, ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে আমরা এলাকাভিত্তিক নানা সমস্যা চিহ্নিত করেছি। হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় ১২ মাস ঘাষ চাষ করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। এসব এলাকায় প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে নির্দিষ্ট সময়ে মওসুমী ঘাস চাষ ও পরবর্তীতে সেই ঘাস সংরক্ষণ করা যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করতেছি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
নজির হোসেনের দুর্গ নিয়ে দুই শিষ্যের কাড়াকাড়ি, মনোনয়নে আনিসুল, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে কামরুল

নজির হোসেনের দুর্গ নিয়ে দুই শিষ্যের কাড়াকাড়ি, মনোনয়নে আনিসুল, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে কামরুল